সেলিনা হােসেন বাংলাদেশের সমকালীন সাহিত্যে একটি বিশিষ্ট আসন অলঙ্কৃত করে আছেন। কথাসাহিত্যিক হিসেবে তিনি সমধিক পরিচিত। তার শিল্পরীতির চমৎকার প্রকাশ ‘পােকামাকড়ের ঘরবসতি' (১৯৮৬) উপন্যাস।
মানুষের দুর্বিষহ জীবন সংগ্রাম এবং তা থেকে মুক্তি লাভের তীব্র আকাঙ্ক্ষা এ উপন্যাসে প্রকাশ পেয়েছে।
মানুষের দুর্বিষহ জীবন সংগ্রাম এবং তা থেকে মুক্তি লাভের তীব্র আকাঙ্ক্ষা এ উপন্যাসে প্রকাশ পেয়েছে। ‘পােকামাকড়ের ঘরবসতি’ উপন্যাসে দক্ষিণ-পূর্ব বাংলার সমুদ্রবেষ্টিত জনজীবনের অস্তিত্ব সগ্রামের জটিল তরঙ্গ রূপায়িত হয়ে উঠেছে।
শাহপরী দ্বীপ ও সেন্টমার্টিন দ্বীপের ধীবর জনগােষ্ঠী সমুদ্রে মাছ ধরে জীবিকা উপার্জন করে। অসহায় এই মানুষগুলাে তােরাব আলী প্রমুখের শােষণের শিকার। কিন্তু পােকামাকড়ের মতাে জীবন থেকে তারাও উদ্ধার পেয়ে স্বচ্ছল জীবনের স্বপ্ন দেখে। মালেক তার নেতৃত্ব দেয় স্বপ্ন দেখায় নতুন সম্ভাবনার। মালেক তাদের সংঘবদ্ধ করে। সমবায়ের নৌকা তৈরি করে সাগরে মাছ আর হাঙর শিকারে যায়। শিকারের সময় বিশাল হাঙরের মুখে মালেকের ডান হাত চলে যায়। জীবন দিয়ে মালেক সকলের কল্যাণ প্রচেষ্টায় ব্রতী হয়েছিল।
পােকামাকড়ের মতাে দুর্বিষহ জীবন থেকে মানুষদের মুক্তি চেয়েছিল মালেক। ঔপন্যাসিক তার এ উপন্যাসের একজন মালেকের জীবন ও সংগ্রামের ছকে ধীবর শ্রেণির স্বপ্ন ও ট্র্যাজেডির স্বরূপ উন্মােচন করেছেন। মালেকের ব্যক্তি আকাক্ষার ভাবময়তা ও বাংলাদেশের আঞ্চলিক জীবনের রূপ-রূপান্তরের পটভূমিতে স্বাভাবিক ও সঙ্গত।
এ উপন্যাসে আঞ্চলিক ভাষার ব্যবহার থাকলেও চরিত্রচিত্রণের প্রয়ােজনে তা শৈল্পিকভাবে উপস্থাপিত হয়েছে। ধীবর শ্রেণির মানুষের স্বপ্নময় জীবনের অপ্রাপ্তি ও বেদনাকে তিনি এ উপন্যাসে উপস্থাপন করেছেন। বাংলাদেশের দক্ষিণাঞ্চলে নদীর মধ্যে শাহপরীদ্বীপ নামক এক ছােট দ্বীপের মানুষের, বিশেষ করে মাঝিদের সংগ্রামী জীবনের বাস্তব রূপায়ণ উপন্যাসটিকে সার্থক উপন্যাসের মর্যাদায় উন্নীত করেছে।
Be Connected with us: Facebook Page Or Join to Our Facebook Goup