বাংলাদেশের নাট্যসাহিত্যে আবদুল্লাহ আল মামুন একটি বিশিষ্ট নাম। নাট্যকার হিসেবে প্রথম তার প্রতিষ্ঠা সুবচন নির্বাসনে' (১৯৭৪) রচনার মাধ্যমে।
দেশের স্বাধীনতা অর্জনের পরপরই সমাজে মূল্যবােধের অবক্ষয় সৃষ্টি হয়। একটা হতাশা তখন প্রবল হয়ে উঠেছে। এই পরিস্থিতি নাটকটির উপজীব্য হয়েছে। সেই সঙ্গে সহজে ‘অভিনয়যােগ্য, একটি মাত্র মহিলা চরিত্র, তীক্ষ্ণ সংলাপ এবং সহজ-সরল বক্তব্যের জন্য নাটকটি ব্যাপক জনপ্রিয়তা অর্জন করে।
সমকালীন সমাজ জীবনের উপকরণ নিয়ে তিনি নাটক রচনা করে নিজের স্বাতন্ত্র সুস্পষ্ট করে তুলতে সক্ষম হন। তার এ নাটকের সংলাপ অত্যন্ত তীক্ষ্ণ ও সুগঠিত। সােশাল স্যাটায়ার রচনায় তার পারদর্শিতা স্বীকৃত।
সুবচন নির্বাসনে’ নাটকে মূল্যবােধের সমস্যা তুলে ধরা হয়েছে। একজন স্কুল শিক্ষকের চরিত্রের মাধ্যমে সে সমস্যাটি প্রকাশ পেয়েছে।
গতানুগতিক আদর্শে বিশ্বাসী শিক্ষক নিজের সন্তানদের দ্বারা অভিযুক্ত হয়েছে। সন্তানেরা মনে করে তাদের জীবন ভ্রান্ত মূল্যবােধের শিক্ষায় পিতা ব্যর্থ করে দিয়েছে। ক্ষোভে হাহাকার করে পিতা বলছে, সত্যনিষ্ঠ মানুষ হিসেবে শান্তি আমার পাওনা, যেমন শান্তি পেয়েছে আমার খােকন। তার সততার দাম কেউ দেয়নি, সততাই অপরাধ।
মুক্তিযুদ্ধোত্তর কালে সর্বব্যাপ্ত হতাশা, প্রত্যয় ও প্রমূল্যের অবক্ষয় এবং সামাজিক বৈনাশিকতার পটে রচিত হয়েছে সুবচন নির্বাসনে নাটক।
Be Connected with us: Facebook Page Or Join to Our Facebook Goup